আমার নায়ক তুমি

অনুবাদ করেছেন মোঃ আব্দুল্লাহ-আল-আসিফ 

প্রকাশকের কথা

এই বইটি আন্তঃ-সংস্থা স্থায়ী কমিটির রেফারেন্স গ্রুপ দ্বারা জরুরী সেটিংসে মানসিক স্বাস্থ্য এবং মনোবিজ্ঞানমূলক সহায়তা (আইএএসসি এমএইচপিএস আরজি) সম্পর্কিত একটি প্রকল্প ছিল। প্রকল্পটি 104 টি দেশের অভিভাবক, শিক্ষক এবং শিশুরা ছাড়াও আইএএসসি এমএইচপিসিআরজির সদস্য এজেন্সিগুলির বৈশ্বিক, আঞ্চলিক এবং দেশ ভিত্তিক বিশেষজ্ঞদের দ্বারা সমর্থিত হয়েছিল। COVID-19 প্রাদুর্ভাবের সময় বাচ্চাদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং মনো-সামাজিক প্রয়োজনের মূল্যায়ন করতে আরবি, ইংরেজি, ইতালিয়ান, ফরাসি এবং স্প্যানিশ ভাষায় একটি বৈশ্বিক সমীক্ষা বিতরণ করা হয়েছিল। কাহিনীর মাধ্যমে সম্বোধনযোগ্য বিষয়গুলির একটি কাঠামো জরিপের ফলাফলগুলি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছিল। বইটি কোভিড-19 দ্বারা প্রভাবিত বেশ কয়েকটি দেশের শিশুদের কাছে গল্প বলার মাধ্যমে ভাগ করা হয়েছিল। শিশুদের, পিতামাতাদের এবং যত্নশীলদের কাছ থেকে যে প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় তা তখন গল্পটি পর্যালোচনা এবং আপডেট করার জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল।
বিশ্বজুড়ে 1,700 এরও বেশি শিশু, বাবা-মা, যত্নশীল এবং শিক্ষকরা কীভাবে COVID-19 মহামারীটির সাথে লড়াই করছেন তা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। আমাদের জরিপ সমাপ্ত করার জন্য এবং এই গল্পটিকে প্রভাবিত করার জন্য এই বাচ্চাদের, তাদের বাবা-মা, যত্নশীল এবং শিক্ষকদের একটি বড় ধন্যবাদ। এটি বিশ্বব্যাপী বাচ্চাদের জন্য এবং বাচ্চাদের দ্বারা নির্মিত একটি গল্প।
এই আইএএসসি এমএইচপিএস আরজি গল্পের স্ক্রিপ্ট লেখার জন্য এবং এই বইয়ের চিত্র তুলে ধরার জন্য হেলেন পটাককে স্বীকার করেছেন।
© আইএএসসি, ২০২০. এই প্রকাশনাটি ক্রিয়েটিভ কমন্স অ্যাট্রিবিউশন-নন-কমার্সিয়াল-শেয়ারএলাইক ৩.০ আইজিও লাইসেন্সের অধীনে প্রকাশিত হয়েছিল (সিসি বাই-এনসি-এসএ 3.0.০ আইজিও; https://creativecommons.org/license/by-nc-sa/3.0/igo )। এই লাইসেন্সের শর্তাদির অধীনে, আপনি এই কাজটি অ-বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পুনরুত্পাদন, অনুবাদ এবং অভিযোজিত করতে পারেন, তবে কাজের যথাযথভাবে উদ্ধৃত হয়।

অনুবাদকের কথা
অনুবাদক শুরুতেই এই বৈশ্বিক মহামারিতে আক্রান্ত মানুষদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছে। প্রিয়জনের মৃত্যুতে শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোকে অনুবাদক এই পরিস্থিতিতে মানসিক ভারসাম্য বজায় রেখে দৃঢ়ভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছে। বাংলাদেশেও কোভিড-১৯ সংক্রমিত হয়েছে। এমন সময়ে আন্তঃ-সংস্থা স্থায়ী কমিটির কর্তৃক প্রকাশিত “My hero is you: How kids can fight COVID-19” বইটির অনুবাদ সাধারণ মানুষের কাছে শিশুদেরকে নিয়ে  মহামারি কোভিড-১৯ কে কিভাবে প্রতিরোধ করা যায় তার সহায়ক একটা বই হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে বলে অনুবাদক প্রত্যাশা করছেন। এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি বই সুপারিশ করবার জন্য অনুবাদক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছেন জোনায়েদ হাসানকে। বিজ্ঞান চর্চা কেন্দ্রের একজন কর্মী হিসেবে লেখক সংগঠনের নিজস্ব ব্লগ ও ফেইসবুক পেইজের জন্য লেখাটি অনুবাদ করেছেন। সেক্ষেত্রে লেখাটি স্বত্ত থাকবে সংগঠনের হাতে।
ভূমিকা
মূলত এটি একটি শিশুতোষ গল্প। শিশুদের মধ্যে করোনা ভাইরাস বিষয়ক এক ধরনের সচেতনতা সৃষ্টির জন্য এই গল্পটা তৈরি হয়েছে। এই মহামরি থেকে বেঁচে থাকার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো ঘরে থাকা। কিন্তু শিশুরা স্বাভাবিকভাবেই চঞ্চল এবং তারা বাইরে বের হয়ে বন্ধুদের সাথে আনন্দ করবে এটাই স্বাভাবিক। এর মাধ্যমে তারা করোনা  দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে এবং অন্যান্যদের সংক্রমিত করতে পারে। তাই তারা কিভাবে এই পরিবর্তীত সময়ে একেকজন নায়ক হয়ে উঠতে পারে এবং করোনা ভাইরাস মোকাবেলাতে ভূমিকা রাখতে পারে এজন্য এই গল্পটা সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রকাশক অনুরোধ বইটি বাচ্চাদের একাকী পড়তে দিবেন না। একজন অভিভাবক পড়ে শোনাবেন অথবা একজন সাথে থেকে বিষয়গুলো বাচ্চাদের বুঝিয়ে দিবেন।



সারার কাছে তার মা একজন বীরাঙ্গনা কারণ তিনি হলেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মা এবং পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী। কিন্তু তার মা নিজেও এখনো করোনাভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক খুঁজে পাননি।
“মা, কোভিড-১৯ কেমন দেখতে?” সারা প্রশ্ন করলো।
“কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাস এতো ছোট যে খালি চোখে সেটা আমরা দেখতে পারি না, সারা”, মা বললেন। “কিন্তু যখন আমরা আক্রান্ত মানুষের সংস্পর্শে আসি তখন তার হাঁচি বা কাশি থেকে বা সেগুলো থেকে সংক্রমিত হওয়া কোনো কিছু স্পর্শ করলে সেখান থেকে অন্য কেউ আক্রান্ত হতে পারে। যারা করোনা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হন তাদের জ্বর এবং শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণে সমস্যা হয়।”
“আমরা এটাকে দেখতে পাই না বলে কি এটাকে প্রতিরোধ করতে পারবো না?” সারা জিজ্ঞাসা করলো।
মা বললেন, “আমরা এটাকে প্রতিরোধ করতে পারি। এজন্য আমি চাই তুমি নিরাপদ থাকো, সারা। এই ভাইরাস নানান মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে এবং তারা প্রত্যকেই আমাদের এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করতে পারে। শিশুরা সবসময়ই অসাধারণ এবং এ কাজে তাদেরও ভূমিকা রয়েছে। এজন্য তোমাকেও নিরাপদ থাকতে হবে, সারা। আমি চাই তুমি আমার বীরাঙ্গনা হয়ে ওঠো।”



সেদিন রাতে বিছানাতে শুয়ে সারা কিছুতেই নিজেকে বীরাঙ্গনা হিসেবে কল্পনা করতে পারছিলো না। সে মন খারাপ করলো। সে চাচ্ছিলো সে স্কুলে যাবে কিন্তু তার স্কুল বন্ধ হয়ে গেছিলো এবং সে তার বন্ধুদের সাথে দেখা করতে পারছিলো না কারণ সেটা নিরাপদ ছিল না। যে করোনা ভাইরাস সারা বিশ্বকে ভয় দেখাচ্ছে তাকে সে থামাতে চাচ্ছিলো।
“হিরোদের তো সুপার পাওরার থাকে”, বিছানায় শুয়ে চোখ বন্ধ করে সারা ভাবতে থাকলো, “আমার কি এমন কোনো সুপার পাওয়ার আছে?”
এমন সময় অন্ধকার থেকে একটা নরম কন্ঠ তার নাম ধরে ডাকলো।
“কে ওখানে?”, সারা ফিস ফিস করে বললো।
“একজন বীরাঙ্গনা হতে তুমি কি রকম সুপার পাওয়ার চাও, সারা?” কণ্ঠটি তাকে জিজ্ঞাসা করলো।
“আমি এমন কিছু একটা মাধ্যম চাই যার সাহায্যে আমি পৃথিবীর সব বাচ্চাদের কিভাবে করোনা ভাইরাসকে প্রতিরোধ করা যায় সেটা জানাতে পারি।”, সারা বললো।
“তাহলে আমাকে তোমার কিভাবে প্রয়োজন?”, কণ্ঠটি জিজ্ঞাসা করলো।
“ আমি এমন কিছু একটা চাই যেটা উড়তে পারবে এবং তার একটি শক্তিশালী কণ্ঠ থাকবে...এমন কিছু একটাই আমার প্রয়োজন।”, সারা বলল।
দ্রুত একটা শব্দের সাথে কিছু একটা রুমের মধ্যে প্রবেশ করলো।

“ কে তুমি?”, সারা তীব্র ভয় পেয়ে জিজ্ঞাসা করলো।
“আমি আরিও”, সে জানালো।
“আমি কখনো আরিও দেখিনি”, সারা বললো।
“কিন্তু আমি তো এখানেই ছিলাম।”, আরিও বললো, “আমি তোমার মন থেকে সৃষ্টি হয়েছি।”
সারা স্বাভাবিক হয়ে উৎফুল্ল হয়ে বললো, “যদি
তুমি আমার সাথে থাকো তাহলে আমি পৃথিবীর সকল বাচ্চাদের জানাতে পারবো কিভাবে করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে এবং আমি বীরাঙ্গনা হয়ে উঠতে পারবো কিন্তু এমন সময়ে বাইরে যাওয়া কি ঠিক হবে যখন আশেপাশে করোনা ভাইরাস রয়েছে?”
“শুধু আমার সাথে, সারা, আমরা একত্রে থাকলে কোনো কিছু আমাদের ক্ষতি করতে পারবে না”, আরিও বললো।
এরপর সারা আরিওর পিঠে চেপে বসলো এবং তারা এক ঝটকাতে তার শোবার ঘরের জানালা দিয়ে বের হয়ে পড়লো। তারা নক্ষত্রের দিকে উড়াল দিলো এবং চাঁদকে তাদের সম্ভাষণ জানালো।


সূর্য উঠার পর তারা একটি পিরামিড দ্বারা আবৃত মরুভূমিতে গিয়ে পৌঁছালো যেখানে অনেকগুলো বাচ্চা শিশু খেলা করছিলো। বাচ্চারা তাদের দেখে চিৎকার করতে শুরু করলো। তারা এমনটা কখনো দেখেনি বিধায় বেশ অবাক হলো।
“স্বাগতম, আমি সেলিম!”, বাচ্চাদের মধ্যে
একজন এক্সবললো, “তোমরা এখানে কি করছো? দুঃখিত, আমরা খুব কাছাকাছি আসতে পারবো
না। আমাদেরকে অন্তত এক মিটার দূরে থাকতে হবে।”
“আমরা একারণেই এখানে এসেছি!”, সারা প্রতিউত্তরে জানালো, “আমি সারা এবং ও আরিও। তুমি কি জানো যে বাচ্চারা তাদের বাবা-মা, দাদা-দাদি, বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশীদেরকে করোনা ভাইরাস থেকে নিরাপদে রাখতে পারে? আমাদের যা প্রয়োজন তা হলো...”
“সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়া!”, মৃদ্যু হেসে সেলিম জানালো।“আমরা জানি, সারা। আমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে সে হাঁচি দেবার সময় কনুই ব্যবহার করে। আমরা করমর্দন না করে ইশারার মাধ্যমে একে অপরকে সম্ভাষণ জানাই। আমরা যথাসম্ভব ঘরে থাকার চেষ্টা করি কিন্তু একটি ঘন-বসতিপূর্ণ শহরে থাকি এবং সবাই সবসময় ঘরে থাকছে না।”
“হুম, সম্ভবত আমি তোমাকে এ ব্যাপারে সাহায্য করতে পারি। মানুষজন করোনা ভাইরাসকে দেখতে না পারলেও আমাকে ঠিকই দেখতে পাবে। লাফিয়ে তোমরা আমার দুই ডানাতে উঠে পড়ো। সেগুলো একমিটার দুরুত্বে অবস্থিত।”
সেলিম এবং সারাকে দুই ডানাতে নিয়ে আরিও আকাশে উড়তে শুরু করলো। তারা শহরের উপর দিয়ে উড়তে থাকলো এবং গান গাইতে থাকলো। সেলিম রাস্তায় খেলতে থাকা বাচ্চাদের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে বলতে থাকলোঃ
“তোমরা বাড়িতে যাও এবং তোমাদের পরিবারকে বাড়িতে থাকতে বলো। এভাবেই তোমরা একে অপরের সর্বোচ্চ সেবা করতে পারো।”

রাস্তার লোকেরা সবাই অবাক হয়ে তাদের দিকে চেয়ে চেয়ে দেখছিলো।তারা ইশারার মাধ্যমে তাদের কথাতে সম্মতি জানালো যে তারা ঘরে যাবে। আরিও অনেক উপরে দিয়ে উড়তে লাগলো। সেলিম আনন্দে চিৎকার করতে লাগলো। উপরের মেঘের মধ্য দিয়ে উড়াএ সময় তারা একটা প্লেন দেখতে পেলো এবং প্লেনের যাত্রিরা তাদের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলো। সেলিম বললোঃ
“মানুষজন খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গাতে চলাচল বন্ধ করে দিবে। অন্তত বর্তমান সময়ের জন্য। তারা তাদের বর্ডারগুলো বন্ধ করে দিচ্ছে এবং এই সময় তারা যাদেরকে ভালোবাসে তাদের সাথেই সময় কাটাবে।”


“ অনেক কিছুই পরিবর্তীত সময়ের জন্য দ্রুত বদলে যাচ্ছে। আমি অনেক সময় এমন পরিবর্তনকে ভয় পাই।”, সারা বললো।
“আমিও পরিবর্তীত সময়ে ভীত ও হতবিহ্বল হয়ে  পড়ি।”, আরিও বললো, “আমি যখন ভীত হয়ে পড়ি তখন আমি খুব আস্তে আস্তে প্রশ্বাস নিই এবং নিঃশ্বাসে আগুণের গোলা ছাড়ি।”
আরিও একটা আগুণের গোলা ছাড়লো এবং সেটা বাতাসে মিলিয়ে গেল।
“আচ্ছা, তোমরা স্বাভাবিক হওয়ার জন্য এসময় কি করো?”, আরিও তাদের জিজ্ঞাসা করলো।
“যারা আমাকে নিরাপদ রাখতে পারেন আমি তাদের কথা ভাবি।”, সারা বললো।
“আমিও, আমিও তাদের কথাই ভাবি যারা আমাকে স্নেহ করে, যেমন আমার দাদা-দাদি।”, সেলিম বললো,“আমি তাদের কাছে যেতে চাই, তাদের জড়িয়ে ধরতে চাই কিন্তু এ অবস্থাতে আমি সেটা করতেও পারছি না। আমরা সাধারণত প্রতি সপ্তাহে দেখা করি কিন্তু এখন সেটাও সম্ভব হচ্ছে না।”
“তুমি তাদের ফোন করতে পারো?”, সারা তাকে জিজ্ঞাসা করলো।
“হ্যাঁ, আমি তাদের প্রতিদিন ফোন করি এবং আমরা সারাদিন কি কি করলো সেটা বলি। তারাও সারাদিন যা যা করলেন সেটা আমাদের বলেন। এতে আমরা আনন্দ অনুভব করি এবং কিছুটা চিন্তামুক্ত হই।”, সেলিম জানালো।
“এসময় আমাদের প্রিয় মানুষদের অনুভব করা খুব স্বাভাবিক কারণ আমরা তাদেরকে দেখতে পারছি না।”, আরিও বললো, “আমরা যে তাদেরকে অনেক ভালোবাসি এবং স্নেহ করি এটা তারই বহিঃপ্রকাশ।তোমরা কি আরেকজন হিরোর সাথে দেখা করতে চাও?”
“হ্যাঁ অবশ্যই!”, চেঁচিয়ে বললো সারা ও সেলিম।
“আমার বন্ধু শাশার একটা চমৎকার সুপার পাওয়ার আছে।”, আরিও বললো, “তাহলে চলো!”
আরিও নিচে নেমে এলো এবং একটি গ্রামে এলো। সেখানে তারা একটা মেয়েকে ফুল তুলতে দেখলো। মেয়েটার আরিওর কাঁধে সেলিম এবং সারাকে দেখে মৃদ্যু হেসে তাদের স্বাগত জানালো।
শাশা আরিওকে দেখে আনন্দিত হয়ে বললো, “আরিও, যেহেতু আমাদের এক মিটার দূরে থাকতে হবে এজন্য আমি দূর থেকেই তোমাকে আমার করমর্দন জানাচ্ছি! তোমরা এখানে কি করছো?”
আরিও বললো,“আমি তোমাকে দেখা মাত্রই তোমার করমর্দন গ্রহণ ও অনুভব করেছি। বাহ, কত সুন্দর করেই না আমরা একে অপরের প্রতি আমাদের ভালোবাসা প্রকাশ করলাম। আমরা আমার বন্ধুদের তোমার অতি ক্ষমতা সম্পর্কে জানাতে এনেছি।”
“আমার কি অতি ক্ষমতা আছে?”, শাশা অবাক হয়ে বললো।
“আমি জানি তোমার বাড়িতে একজন করোনা আক্রান্ত অসুস্থ মানুষ রয়েছেন। তুমি বাড়িতে থেকে এটা নিশ্চিত করছো যেন কেউ তার সাথে না থাকে এবং তার সংস্পর্শে এসে আক্রান্ত না হয়।”, আরিও বললো।
“হ্যাঁ, আমার বাবা আক্রান্ত হয়েছেন এবং সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তিনি এভাবেই সবার থেকে আলাদা হয়ে তার শোবার ঘরে থাকবেন।”, শাশা বললো, “যাইহোক, এটা খুব একটা খারাপ না। আমি এবং পরিবারের অন্যরা মিলে রান্না করি, গেইম খেলি। আমি এবং আমার ভাইয়েরা মিলে আমরা নাচ করি, গল্পের বই পড়ি। মাঝে মাঝে আমি আমার স্কুলে ফিরে যেতে চাই। বাড়িতে থাকতে প্রথম প্রথম খারাপ লাগতো কিন্তু এখন আমি মানিয়ে নিয়েছি।”
সেখানে তারা মানুষে পরিপূর্ণ একটা ক্যাম্প দেখলো। তাদের মধ্য থেকে একটা মেয়ে তাদের ইশারাতে হাই জানালো।
“ওহে আরিও, তোমাকে আবারো দেখে ভালো লাগলো।”, মেয়েটা বললো, “যেহেতু আমাদের এক মিটার দূরে থাকতে হবে এজন্য আমি এখান থেকেই তোমার সাথে কথা বলবো। আমি তোমার বন্ধুদের সাথে পরিচিত হতে চাই। আমি লেইলা।”
“আমি সারা এবং এ হলো সেলিম।”, সারা উত্তর দিলো, “তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে তুমি করোনা ভাইরাস থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য চেষ্টা করছো। তোমরা আর কি কি করছো?”
“আমরা সাবান পানি দিয়ে হাত ধুচ্ছি।”, লেইলা জানালো।
“তোমরা হাঁচি দেবার সময় কনুই ব্যবহার করছো তো?”, সারা জিজ্ঞাসা করলো।
“তুমি কি একটু সেটা করে দেখাবে?”, লেইলা জিজ্ঞাসা করলো এবং সেলিম সেটা করে দেখালো।
“আমরা সাহসী থাকার চেষ্টা করছি কিন্তু আমি একটা ব্যাপার নিয়ে চিন্তিত।”, লেইলা বললো, “আমি কি সেটা নিয়ে তোমাদের সাথে সেটা নিয়ে কথা বলতে পারি? আমি শুনেছি এখানে একজন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কি মারা যেতে পারে? এটা আমাকে খুব ভীত করছে।”
সেখানে তারা মানুষে পরিপূর্ণ একটা ক্যাম্প দেখলো। তাদের মধ্য থেকে একটা মেয়ে তাদের ইশারাতে হাই জানালো।
“ওহে আরিও, তোমাকে আবারো দেখে ভালো লাগলো।”, মেয়েটা বললো, “যেহেতু আমাদের এক মিটার দূরে থাকতে হবে এজন্য আমি এখান থেকেই তোমার সাথে কথা বলবো। আমি তোমার বন্ধুদের সাথে পরিচিত হতে চাই। আমি লেইলা।”
“আমি সারা এবং এ হলো সেলিম।”, সারা উত্তর দিলো, “তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে তুমি করোনা ভাইরাস থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য চেষ্টা করছো। তোমরা আর কি কি করছো?”
“আমরা সাবান পানি দিয়ে হাত ধুচ্ছি।”, লেইলা জানালো।
“তোমরা হাঁচি দেবার সময় কনুই ব্যবহার করছো তো?”, সারা জিজ্ঞাসা করলো।
“তুমি কি একটু সেটা করে দেখাবে?”, লেইলা জিজ্ঞাসা করলো এবং সেলিম সেটা করে দেখালো।
“আমরা সাহসী থাকার চেষ্টা করছি কিন্তু আমি একটা ব্যাপার নিয়ে চিন্তিত।”, লেইলা বললো, “আমি কি সেটা নিয়ে তোমাদের সাথে সেটা নিয়ে কথা বলতে পারি? আমি শুনেছি এখানে একজন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কি মারা যেতে পারে? এটা আমাকে খুব ভীত করছে।”
সেখানে তারা মানুষে পরিপূর্ণ একটা ক্যাম্প দেখলো। তাদের মধ্য থেকে একটা মেয়ে তাদের ইশারাতে হাই জানালো।
“ওহে আরিও, তোমাকে আবারো দেখে ভালো লাগলো।”, মেয়েটা বললো, “যেহেতু আমাদের এক মিটার দূরে থাকতে হবে এজন্য আমি এখান থেকেই তোমার সাথে কথা বলবো। আমি তোমার বন্ধুদের সাথে পরিচিত হতে চাই। আমি লেইলা।”
“আমি সারা এবং এ হলো সেলিম।”, সারা উত্তর দিলো, “তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে তুমি করোনা ভাইরাস থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য চেষ্টা করছো। তোমরা আর কি কি করছো?”
“আমরা সাবান পানি দিয়ে হাত ধুচ্ছি।”, লেইলা জানালো।
“তোমরা হাঁচি দেবার সময় কনুই ব্যবহার করছো তো?”, সারা জিজ্ঞাসা করলো।
“তুমি কি একটু সেটা করে দেখাবে?”, লেইলা জিজ্ঞাসা করলো এবং সেলিম সেটা করে দেখালো।
“আমরা সাহসী থাকার চেষ্টা করছি কিন্তু আমি একটা ব্যাপার নিয়ে চিন্তিত।”, লেইলা বললো, “আমি কি সেটা নিয়ে তোমাদের সাথে সেটা নিয়ে কথা বলতে পারি? আমি শুনেছি এখানে একজন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কি মারা যেতে পারে? এটা আমাকে খুব ভীত করছে।”
বরফের পর্বত দৃষ্টিসীমার মধ্যে এলো এবং আরিও একটা ছোট শহরে এসে নামলো। একটা জলধারার পাশে কিছু বাচ্চারা খেলছিলো। তাদের মধ্যে একজন আরিওকে দেখে তাকে ডাকলো এবং সম্ভাষণ জানালো।
“হ্যালো, কিম”, আরিও বললো, “বন্ধুরা, আমি তোমাদেরকে আমার কিছু বন্ধুদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলো এবং বর্তমানে সুস্থ হয়েছে।”
“এটা কেমন?”, কিমকে সেলিম জিজ্ঞাসা করলো।
“আমি খুব কাশছিলাম এবং মাঝে মাঝে
অনেক গরম অনুভব করছিলাম। আমি অনেক ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম এবং কিছুদিনের জন্য মাঠে খেলতেও যাইনি। আমি অনেক ঘুমাচ্ছিলাম এবং আমার বাবা-মা আমাকে দেখাশোনা করেছিলো। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকের দাদা-দাদিদের হাসপাতালে যেতে হয়েছিলো এবং ডাক্তার-নার্সরা তাদের সদয় আচরণ যথাযথ সেবা করে সুস্থ করে তুলেছে। আমাদের প্রতিবেশীরা আমাদের সাহায্য করেছে এবং এক-দুই সপ্তাহ পর আমরা সুস্থ হয়ে ওঠেছি।”, কিম তাদের জানালো।
“আমি কিমের বন্ধু।”, একজন ছেলে তাদের দিকে ইঙ্গিত করে বললো। “কিমের করোনা হয়েছিলো বলে আমরা ওকে আলাদা করে দিইনি যদিও আমি ওকে দেখতাম না। আমি কখনোই ওর যত্ন নেওয়া বন্ধ করিনি এবং আমরা আনন্দিত যে আমরা একসাথে খেলতে পারছি।”
“মাঝে মাঝে যে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি আমরা আমাদের বন্ধুদের জন্য করি সেটা হলো তাদের রক্ষা করা।”, আরিও বললো, “ আর মাঝে মাঝে ক্ষণিকের জন্য তাদের থেকে দূরে থাকাটাও তাদের রক্ষা করার অর্থ হতে পারে।”
সারা ঘুমিয়ে পড়লো এবং পরদিন সকালে যখন সারা ঘুম থেকে উঠল তখন সে আর আরিওকে দেখতে পেল না। সে তখন তার নিরাপদ
জায়গাতে গেলো আরিওর সাথে কথা বলতে এবং তারা যা যা দেখেছিলো তার ছবি আঁকালো এবং এই অভিযাত্রার সবকিছু শিখলো। তারপর সে এগুলো নিয়ে তার মায়ের কাছে গেল এবং তাকে সবকিছু খুলে বললো।
“আমরা এখন সবাইকে নিরাপদ থাকার জন্য বলতে পারবো।”, সারা বললো, “আমার এই অভিযাত্রাতে আমি অনেক হিরোদের সাথে দেখা করেছি।”
“হ্যাঁ সারা, তুমি ঠিকই বলেছো।”, মা বললো, “এমন অনেক বীর-বীরাঙ্গনা মানুষকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করছে, যেমন অসাধারণ ডাক্তার-নার্স কিন্তু তুমি আমাকে মনে করিয়ে দিলে যে করোনা মোকাবেলাতে আমরা সকলেই একেকজন নায়ক হয়ে ঊঠতে পারি, প্রতিদিন, এবং তুমিই আমার প্রকৃত বীরাঙ্গনা।”

Post a Comment

0 Comments